আর্জেন্টিনার জনপ্রিয় ফুটবলার গঞ্জালো হিগুয়াইন। রিয়াল মাদ্রিদ, নাপোলি, জুভেন্টাস- ক্লাব ফুটবলে মুগ্ধ করে চলেছেন দর্শকদের। তবে বিশ্বখ্যাত ফুটবলার স্বদেশী লিওনেল মেসির মতো তারও বড় একটা আক্ষেপ রয়ে গেছে। সেটি হলো জাতীয় দলের হয়ে তেমন কিছু করতে না পারা।
বড় টুর্নামেন্টে দেশের হয়ে গোলের সুযোগ পেয়েও একাধিকবার গোল মিস হয়ে হয়েছে তার। সে কারণে আর্জেন্টাইনদের নিকট খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই হিগুয়াইন। তবুও আবারো নিজের যোগ্যতায় জায়গা করে নিয়েছেন আগামী বিশ্বকাপ দলে। এছাড়া ইতালি ও স্পেনের সাথে প্রীতি ম্যাচেও ডাক পেয়েছেন হিগুয়াইন।
ক্লাবে ভালো খেলেও দেশের হয়ে ভালো কিছু না করতে পারার আক্ষেপ হিগুয়াইনেরও কম নয়। সম্প্রতি ফক্স স্পোর্টের সাথে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অনেক কিছু্।
২০১৬ সালে কোপা আমেরিকার সেই দু:সহ স্মৃতির পর অবসর নিতে চেয়েছিলেন হিগুয়াইন। কিন্তু তার মায়ের তাগিদের কারণে তা করতে পারেননি। হিগুয়াইন বলেন, ”টুর্নামেন্টের পর অবসরের ব্যাপারে আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু আমার মা আমাকে তাগিদ দিয়েছিলেন ফুটবলটা চালিয়ে যাওয়ার জন্য। মা বলেছিল, যদি আমি ফুটবল না খেলি তাহলে তিনি খুব কষ্ট পাবেন। মাকে খুশি রাখার জন্যেই এখন পর্যন্ত ফুটবল খেলে যাচ্ছি।”
নিজের পরিবারকে সবচেয়ে বড় উৎসাহদাতা মনে করেন বিশ্বখ্যাত এ ফুটবলার। তিনি বলেন, ”আমার পরিবার যে উৎসাহ দিয়েছে আমাকে সেটার কারণেই বর্তমানে আমি ফুটবল খেলা চালিয়ে যেতে পারছি। কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করার আগে জীবনের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে পরিবার সবার আগে। আমার পরিবার আমার বন্ধু এরাই আমার সবকিছু। তারপরই আমার পেশা আসবে যেমন আমি ফুটবলার আপনি সাংবাদিক।”
এছাড়া পরিবার কিংবা সন্তানদের কেউ অপমান করবে সেটা একদমই বরদাস্ত করবেন না বলেও জানান হিগুয়াইন।
কিছুদিন বাদেই সন্তানের বাবা হবেন হিগুয়াইন। এ বিষয়ে খুব উল্লসিত তিনি। জানান, ”যখন আপনি পিতৃত্বের স্বাদ পাবেন তখন সেই মুহূর্তটা বলে বোঝানোর মতো নয়। সবকিছুই তখন অর্থহীন হয়ে যাবে।”
নিজের শক্তি সম্পর্কে হিগুয়াইন বলেন, ”আমি সবসময় লড়াই করতে পছন্দ করি এবং আমি অনেকের মধ্যে সেরা হতে চাই। ইউরোপে টানা ১২ বছর ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবল খেলা সেরা দলগুলোর একটিতে খেলা মুখের কথা নয়। এখানে খেলতে হলে দরকার প্রচুর মানসিক এবং শারীরিক শক্তি।”
বর্তমান ক্লাব জুভেন্টাসের হয়ে কি অবদান রাখবেন এমন কথার জবাবে তিনি বলেন, ”আমি রিয়াল মাদ্রিদের শীর্ষ দশ গোলদাতার ভেতর একজন। আর্জেন্টিনার শীর্ষ দশ গোলদাতার ভেতরেও আছি আমি। আমি নাপোলিরও শীর্ষ দশ গোলদাতার ভেতরে আছি এবং আশা করছি জুভেন্টাসেও এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পারবো।”
ব্যক্তিগত জীবনের বিষয়ে হিগুয়াইন বলেন, ”ফুটবলই জীবনের সব না। ফুটবল ছাড়াও এখানে অন্য আরও অনেক কিছু রয়েছে যা মানুষজন খালি চোখে দেখতে পারে না। মানুষ দেখে আমি একজন ফুটবলার যে সারাদিন বলে লাত্থি মারে কিন্তু তারা ভুলে যায় ফুটবলের বাইরের চিন্তাভাবনাগুলো। তাদের ভালো এবং খারাপের আক্রোশে আক্রান্ত হতে হয় আমাদের।”